কমলা দামা
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কমলা দামা (বৈজ্ঞানিক নাম:Zoothera citrina) দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বাংলাদেশের ১৫ প্রজাতির দামা পরিবারের একটি। দামা পরিবারের অন্যান্য প্রজাতিগুলি হচ্ছে আঁশটে দামা, ধলাঘার কালিদামা, ধলাপাখ কালিদামা, কালাবুক দামা, কালাপাশ দামা, কালচে দামা, লালগলা দামা, নীল শীষদামা, নীল শীলাদামা, পাতি কালিদামা, টিকেলের দামা, ভ্রুলেখা দামা, খয়রাপিঠ দামা ও লম্বা ঠোঁট দামা। এরা কমলাফুলি বা কমলা দোয়েল নামেও পরিচিত। ফকিরহাটে মেটে দোয়েল বা কমলা বউ বলে।।এই ১৫ প্রজাতির মধ্যে কেবল কমলা দামা বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী দুর্লভ দামা। বাকি ১৪ প্রজাতি মাঝে মাঝে, বিশেষ করে শীতকালে দেখা যায়।
আকার
কমলাবউ দোয়েল আকারের পাখি। লম্বায় ২১ থেকে ২২ সেন্টিমিটার। ওজন ৬০ গ্রাম। পুরুষ পাখির মাথার চাঁদি, ঘাড় ও বুকের রং গাঢ় কমলা। তাতে আছে হালকা হলুদের ছোঁয়া ও লালচে আভা। পেট ও লেজের নিচটা সাদা। পিঠ ও লেজের ওপরটা নীলচে-ধূসর। ডানার প্রান্তে রয়েছে
কয়েকটি সাদা দাগ। স্ত্রীটি দেখতে পুরুষটির মতোই, তবে বুকের রং একটু ফিকে এবং পিঠ ও লেজ ছাইরঙা। স্ত্রী-পুরুষনির্বিশেষে ঠোঁট কালচে; পা ও আঙুল হালকা গোলাপি। মায়াবী চোখের মণি পিঙ্গল। বাচ্চাগুলোর রং গাঢ় ধূসর, তার ওপর কমলা ছোপ।স্বভাব
Female |
এরা বেশ লাজুক। মানুষের চোখের আড়ালে গ্রামীণ ঝোপ-জঙ্গল, বন-বাগান বা বাঁশঝাড়ের স্যাঁতসেঁতে নির্জন পরিবেশে থাকতে পছন্দ করে। প্রজননের সময় ছাড়া সাধারণত একাকী জোড়পায়ে ছোট ছোট লাফ দিয়ে ঘুরে বেড়ায়। মাটিতে পড়ে থাকা পাতা উল্টে পোকামাকড়, কেঁচো ইত্যাদি খায়। ফলও খেতে পারে। ‘চিরি-চিরি-রিরি...ঝিরি বা কিরি-কিরি...কিরি-কিরি’ স্বরে ডাকে।
প্রজননকাল
এপ্রিল থেকে জুন প্রজননকাল। এক থেকে পাঁচ মিটার উঁচু কোনো গাছের ঘন পাতাওয়ালা দুই ডালের ফাঁকে শুকনা পাতা, মস, ঘাস, সরু শিকড় ও মাটি দিয়ে চায়ের পেয়ালার মতো বেশ মজবুত বাসা বানায়। স্ত্রী কমলাবউ তিন-চারটি গোলাপি ডিম পাড়ে। তাতে থাকে নীলচে ও ফিকে আভা। আর সামান্য ছিট-ছোপ। ডিম ফোটে ১৪ দিনে। বাচ্চারা উড়তে শেখে ১০ দিনে।
0 comments:
Post a Comment