লক্ষ্মীপেঁচা || Barn Owl

লক্ষ্মীপেঁচা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে


লক্ষ্মীপ্যাঁচা বা লক্ষ্মীপেঁচা (ইংরেজিBarn Owlবৈজ্ঞানিক নামTyto alba) এক ধরনের পেঁচা প্রজাতির পক্ষীবিশেষ। মাঝারি থেকে বৃহৎ আকৃতির হয়ে থাকে এ পাখিটি। শরীরের তুলনায় মুখমণ্ডল অনেকাংশেই বড় হয়ে থাকে। লম্বা পাখনা, ফ্যাকাশে ও হৃদয় আকৃতি মুখের গড়ন এবং বর্গাকৃতির লেজ প্রধান এর বৈশিষ্ট্য। অন্যান্য শিকারী পাখি - ঈগলবাজের ন্যায় এর লম্বা, শক্তিশালী পায়ের থাবার সাথে সুতীক্ষ্ণ নখর রয়েছে।
মূলতঃ গ্রাম এলাকার বিভিন্ন খামার এবং বনভূমিতে এদেরকে দেখা যায়। বাংলাদেশে টাইটেনিডে পরিবারভূক্ত লক্ষ্মীপেঁচার ৩টি প্রজাতি রয়েছে। সেগুলো হলো - অস্ট্রেলেশিয়ান গ্রাস-আউল (Tyto longimembris), লক্ষ্মীপেঁচা (Tyto alba) এবং অরিয়েন্টাল বে-আউল (Phodilus badius)।

বিবরণ

সাধারণতঃ মাঝারি প্রকৃতির পেঁচা হিসেবে লক্ষ্মীপেঁচার পাখার দৈর্ঘ্য ৭৫-১১০ সেন্টিমিটার। শারীরিক গঠন ২৫-৫০ সেন্টিমিটারবিশিষ্ট।[২][৩] প্রজাতিভেদে ওজন ১৮৭ গ্রাম থেকে ৮০০ গ্রামের মধ্যে হয়ে থাকে। তবে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এলাকার লক্ষ্মীপেঁচা তুলনামূলকভাবে কম ওজনের হয়।[৪] বসন্ত ঋতুতে এদের প্রজনন মৌসুম। উঁচু গাছের গর্তে এরা বাসা বাঁধে। ছোট ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণীসরীসৃপমাছপোকামাকড়সহ ছোট পাখি শিকার করে জীবনধারণ করে।
অধিকাংশ প্রজাতির লক্ষ্মীপেঁচার মাথা এবং শরীরের ঊর্ধ্বাংশ সচরাচর হাল্কা বাদামী ও হাল্কা রঙের হয়ে থাকে। পালকগুলো বিশেষ করে কপাল ও পিছনের দিকে ঘন ধূসর বর্ণের হয়। হৃদয় আকৃতির মুখাংশটি প্রায়শঃই উজ্জ্বল সাদাটে হলেও কিছু প্রজাতির বাদামী রঙের হয়ে থাকে।
নিম্নাংশের পালকগুলো সাদা থেকে লালচে হয়ে থাকে। এছাড়াও কিঞ্চিৎ কালো-বাদামী বর্ণের সংমিশ্রণও লক্ষ্য করা যায়। এ ধরনের লক্ষ্মীপেঁচা ইউরোপীয় মহাদেশে লক্ষণীয়। স্ত্রীজাতীয় প্যাঁচাগুলোর পালকের রঙের ভিন্নতা সুষ্পষ্ট এবং শারীরিক কাঠামোও গড়পড়তা শক্তিশালী। অক্ষিগোলক কালচে বাদামী বর্ণের। ঠোঁটের ন্যায় পায়ের নখরগুলো গোলাপী থেকে গাঢ় বাদামী-গোলাপী হয় এবং থাবা এলাকা কালো হয়ে থাকে।[৫]

স্বভাব

নিশাচর ও শিকারী পাখি হিসেবে লক্ষ্মীপেঁচার আচরণ অন্যান্য পেঁচার ন্যায়। কিন্তু গোধূলীলগ্নে এটি সক্রিয় হয়ে উঠে। মাঝে মাঝে দিনের বেলায়ও কিঞ্চিৎ দেখা মেলে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২০০০ মিটার উপরে কিংবা ৩০০০ মিটার নিচে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এলাকার খামার ও ঘাসপূর্ণ এলাকা, বনভূমিতে এদেরকে দেখা যায়। শিকার নিয়ে কোন কাঠ বা খুঁটির উপরিভাগে বসতে পছন্দ করে। খুবই নিঃশব্দে এদের পদচারণা ঘটে অর্থাৎ আওয়াজবিহীন অবস্থায় এরা উড়তে সক্ষমতা প্রদর্শন করে। এদের শ্রবণশক্তি খুবই তীক্ষ্ণ।এ ধরনের বৈশিষ্ট্য সমগোত্রীয় প্রজাতি হিসেবে টি. এ. গুট্টাটা এবং টি. এ. এল্বাপেঁচায় দেখা যায় যারা ইউরোপের দক্ষিণ-পূর্বাংশ এবং আইবেরিয়ান উপত্যকা ও দক্ষিণ ফ্রান্সে বসবাস করে।[৬]

0 comments:

Post a Comment

My Instagram